স্টার্টআপ মাইক্রোলোান প্রোগ্রাম সুদবিহীন, মাসিক ১০০% লাভভিত্তিক মডেল- ড. রাজু আহমেদ দিপু
স্টার্টআপ মাইক্রোলোান প্রোগ্রাম সুদবিহীন, মাসিক ১০০% লাভভিত্তিক মডেল- ড. রাজু আহমেদ দিপু
Suggested:
বাংলাদেশের মানুষের চাকরি বা দক্ষতা অর্জনে অনাগ্রহের গভীর বিশ্লেষণ- ড. রাজু আহমেদ দিপু বাংলাদেশে অনেক তরুণ এবং কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও অনেকেই চাকরির প্রতি বা দক্ষতা উন্নয়নের প্রতি পর্যাপ্ত আগ্রহ দেখায় না। এর পেছনে বহুমাত্রিক সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণ রয়েছে। নিচে বিস্তারিত বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো:
বাংলাদেশে অনেক তরুণ এবং কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও অনেকেই চাকরির প্রতি বা দক্ষতা উন্নয়নের প্রতি পর্যাপ্ত আগ্রহ দেখায় না। এর পেছনে বহুমাত্রিক সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণ রয়েছে। নিচে বিস্তারিত বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো:
Table of contents [Show]
পুঁথিগত শিক্ষার প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা: বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনো বাজার চাহিদাভিত্তিক বা দক্ষতা-ভিত্তিক শিক্ষা প্রদান করে না।
কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষার প্রতি অবহেলা: অধিকাংশ পরিবার এবং শিক্ষার্থী “ডিগ্রি” বা "সরকারি চাকরি"কেই চূড়ান্ত সাফল্য মনে করে, অথচ বাস্তবমুখী বা প্রযুক্তি-ভিত্তিক প্রশিক্ষণের প্রতি আগ্রহ কম।
পাঠ্যক্রমের সাথে শিল্পখাতের সংযোগ নেই: পড়াশোনা শেষে দক্ষতার অভাবে সরাসরি শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেক তরুণ।
সরকারি চাকরির প্রতি অতিরিক্ত মোহ: সমাজে একটি প্রবল ধারণা আছে যে, সরকারি চাকরি মানেই নিরাপত্তা, সম্মান ও স্থায়ী জীবিকা। ফলে প্রাইভেট সেক্টর বা উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ কম।
পেশার সম্মানবোধের অভাব: অনেকেই নির্দিষ্ট কিছু পেশাকে (যেমন, কারিগরি কাজ, হস্তশিল্প, কৃষি) নিচু চোখে দেখে, যার ফলে সেই ধরনের দক্ষতা অর্জনে আগ্রহ কমে যায়।
‘চাকরি পেলেই হবে’ মনোভাব: দক্ষতা উন্নয়ন বা স্ব-উন্নতির চেয়ে চাকরি পাওয়াটাকেই চূড়ান্ত লক্ষ্য ধরে নেওয়া হয়। ফলে ক্যারিয়ার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেওয়ার প্রবণতা কম।
দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে অনীহা: দরিদ্র বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর তরফে অনেক সময় তাত্ক্ষণিক আয়ের চাহিদার কারণে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণে সময় বা অর্থ ব্যয় করার সুযোগ থাকে না।
অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রার প্রবণতা: অনেক তরুণ দ্রুত বিদেশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে, যা দক্ষতা অর্জনের পরিবর্তে দালালের উপর নির্ভরশীল করে তোলে। দক্ষতার প্রয়োজনীয়তাকে তারা অগ্রাহ্য করে।
অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারের সীমাবদ্ধতা: বাজারে উচ্চ মানের চাকরির অভাব থাকায় অনেকেই দক্ষতা অর্জনকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ মনে করে।
উপযুক্ত প্রশিক্ষণের অভাব: প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানসম্মত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা ডিজিটাল শিক্ষা সুযোগ কম।
সফল রোল মডেলের অভাব: বাস্তব জীবনের সফল উদ্যোক্তা বা স্কিলড কর্মীর উদাহরণ সমাজে কম প্রচারিত হয়, ফলে নতুন প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হয় না।
গাইডলাইন ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের অভাব: পড়ালেখার পরে কোথায়, কিভাবে দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে তা সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই।
সরকারি উদ্যোগগুলোর কার্যকারিতা কম: অনেক দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প প্রচারণা ও বাস্তবায়নের দুর্বলতার কারণে সাধারণ জনগণের কাছে পৌছাতে ব্যর্থ হয়।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার অভাব: চাকরি পেতে 'চেনাজানা' বা ঘুষের প্রয়োজনীয়তার ধারণা অনেকের মধ্যে অনীহা ও হতাশা তৈরি করে।
বাংলাদেশে চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়নে অনাগ্রহের মূল কারণ হলো:
অবাস্তব সামাজিক প্রত্যাশা
বাস্তবমুখী শিক্ষার অভাব
চাকরির বাজারের সীমাবদ্ধতা
মানসিক বাধা
অর্থনৈতিক বাস্তবতা
সুযোগের অপ্রতুলতা
যদি দেশের যুবসমাজকে দক্ষতা ও কাজের প্রতি আগ্রহী করতে হয়, তাহলে প্রথমে এই মানসিকতা এবং কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতাগুলো ভেঙে দিতে হবে। পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, বাজারমুখী শিক্ষা সংস্কার এবং কর্মসংস্থানের স্বচ্ছ সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ একটি গুরুতর কর্মসংস্থান সংকটের মুখোমুখি। বিগত কয়েক দশকের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও, কর্মসংস্থান সৃষ্টির হার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি এবং মহামারির ধাক্কায় ব্যাপক হারে চাকরিচ্যুতি হয়েছে। ২০২৪ সালের হিসাবে, বাংলাদেশের সরকারিভাবে বেকারত্বের হার ৪.৫% হলেও প্রকৃত চিত্র আরও উদ্বেগজনক — অধিকাংশ মানুষ অপ্রতুল উৎপাদনশীলতার অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। যুবসমাজ (১৮–৩৫ বছর) বিশেষভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত: মোট বেকারের প্রায় ৭৯% যুবক-যুবতী। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ১৩% এবং ২০২৩ সালে প্রায় ৯ লাখ স্নাতক বেকার ছিল।
নারী কর্মসংস্থানেও বড় ধরনের বৈষম্য রয়েছে: নারীদের শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ প্রায় ৩৬%, যেখানে পুরুষদের প্রায় ৮০%। একইভাবে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও চাকরির বাজারে অতিরিক্ত বাধার সম্মুখীন হন।
ভৌগলিকভাবে বেকারত্বের হার শহর ও গ্রামে ভিন্ন। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো শহরে শিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা বেশি, যেখানে গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষিতে অপ্রকাশিত অর্ধেকর্মসংস্থান বিদ্যমান। কিছু জেলায় যেমন বরিশাল ও রংপুর অঞ্চলে মৌসুমী বেকারত্বের হার ৬% ছাড়িয়ে গেছে।
সার্বিকভাবে, বাংলাদেশকে আগামী এক বছরের মধ্যে আনুমানিক ১ কোটি (১০ মিলিয়ন) কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ১৮–৪৫ বছর বয়সী বেকার ও অর্ধেকর্মসংস্থানপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে — একটি উচ্চাভিলাষী কিন্তু সময়োপযোগী লক্ষ্য।
এই রিপোর্টে বাংলাদেশের জন্য উপযোগী একটি সমন্বিত কর্মসংস্থান কৌশল উপস্থাপিত হয়েছে, যা অভিজ্ঞতার আলোকে প্রস্তুত এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পরিকল্পনাটি খাতভিত্তিক উদ্যোগসমূহের (কৃষি, আইসিটি, নির্মাণ, ফ্রিল্যান্সিং, উৎপাদন ইত্যাদি) রূপরেখা দেয়, বাস্তবায়নের পদক্ষেপ ও নির্ধারিত সময়সূচি নির্ধারণ করে এবং সম্পৃক্ত নীতিমালা ও পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দেয়। এই কৌশল বিশেষভাবে যুবসমাজ, নারী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির উপর জোর দেয় এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে তুলবে।
ক্যারিয়ারভিত্তিক শিক্ষা: মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তর থেকেই কারিগরি ও প্রযুক্তি-ভিত্তিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।
ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সংযোগ: বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে চাকরির বাজারের চাহিদার ভিত্তিতে কোর্স চালু করা (যেমন: আইটি, ডেটা অ্যানালিটিক্স, স্মার্ট এগ্রিকালচার)।
ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং: স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পেশাদার ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেবা চালু করা।
পেশার সম্মান নিশ্চিত করা: সকল পেশাকে (কারিগরি, সেবা, কৃষি) সমান মর্যাদার আসনে তুলে ধরা — গণমাধ্যমে ইতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে।
সফলতার নতুন সংজ্ঞা: শুধু সরকারি চাকরির বাইরে উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, স্কিলড কর্মীদের জীবনকাহিনী প্রচার করে তরুণদের অনুপ্রাণিত করা।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: ইউনিয়ন পর্যায়ে কম খরচে আইটি ও কারিগরি প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপন।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম: সরকারি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে (যেমন: "জাতীয় স্কিলস পোর্টাল") সহজে ফ্রি কোর্স ও সার্টিফিকেশন প্রদান।
মোবাইল ট্রেনিং ইউনিট: দূরবর্তী এলাকায় পৌঁছাতে ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ ভ্যান চালু করা।
ট্রেনিং ভাতা: প্রশিক্ষণকালীন সময়ে যুবকদের মাসিক ভাতা প্রদান, যেন তারা অর্থনৈতিক চাপ ছাড়াই দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
স্টার্টআপ অনুদান ও ঋণ: প্রশিক্ষণ শেষ করা যুবকদের জন্য সহজ শর্তে স্টার্টআপ লোন বা অনুদান ব্যবস্থা চালু করা।
চাকরি নিশ্চিতকরণ চুক্তি: যারা সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করবে তাদের ৬ মাসের মধ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা।
জাতীয় ফ্রিল্যান্সার নেটওয়ার্ক: সরকারীভাবে সার্টিফাইড ফ্রিল্যান্সার ডাটাবেস তৈরি এবং বিদেশী ক্লায়েন্টদের সাথে সংযোগের সুযোগ বৃদ্ধি।
পেমেন্ট সিস্টেম সহজীকরণ: পেপাল/স্ক্রিলের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালু করে ফ্রিল্যান্স আয়ের পথ সহজ করা।
ই-কমার্স ও ডিজিটাল ব্যবসায় উন্নয়ন: ছোট উদ্যোক্তাদের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান।
ইন্ডাস্ট্রি অ্যাপ্রেন্টিসশিপ স্কিম: সরকারি উদ্যোগে বেসরকারি কোম্পানির সাথে মিলে শিক্ষানবীশ কর্মসূচি চালু করা, যাতে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) প্রকল্প: কারিগরি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের প্রকল্পে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ানো।
জাতীয় যুব পুরস্কার: দক্ষতা অর্জন, উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও কর্মসংস্থানে অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার প্রদান।
মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম: সফল উদ্যোক্তা ও স্কিলড পেশাজীবীদের সাথে যুবসমাজের সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি।
নারী, প্রতিবন্ধী ও গ্রামীণ যুবকদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ এবং চাকরির কোটা রাখা।
উৎসাহমূলক ভাতা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা অনুযায়ী:
দক্ষতা বৃদ্ধি ছাড়া কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব নয়।
মানসিকতা পরিবর্তন ছাড়া দক্ষতা উন্নয়নে আগ্রহ বাড়ানো যাবে না।
সরকার, বেসরকারি খাত, এনজিও এবং কমিউনিটি — সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
এই সুপারিশমালার কার্যকর বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়নের প্রতি আগ্রহী হবে, এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
চ্যালেঞ্জ: অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ, গ্র্যাজুয়েট বেকারত্ব, অনানুষ্ঠানিক খাতের আধিপত্য।
নীতি প্রস্তাব: আইসিটি শিল্প, স্টার্টআপ, আর্থিক সেবা, হালকা প্রকৌশল (Light Engineering) এবং পরিষেবা খাতে দ্রুত স্কিল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক ইনকিউবেশন সেন্টার।
মূল লক্ষ্য: আধুনিক ICT স্কিল দিয়ে বছরে ২ লাখ নতুন চাকরি তৈরি।
চ্যালেঞ্জ: শিল্প-বাণিজ্যের সমান্তরালে মানবসম্পদ দক্ষতার অভাব।
নীতি প্রস্তাব: ইলেকট্রনিক্স, শিপ বিল্ডিং, পর্যটন ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে স্কিল উন্নয়ন প্রোগ্রাম চালু। কর্ণফুলী টানেল ও পোর্ট-ভিত্তিক কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ।
মূল লক্ষ্য: রপ্তানিমুখী কারখানাগুলোতে প্রতি বছর কমপক্ষে ১ লাখ কর্মী স্কিলড করা।
চ্যালেঞ্জ: কৃষিভিত্তিক শ্রমের আধিক্য ও মৌসুমি বেকারত্ব।
নীতি প্রস্তাব: ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ (Agro-processing), সেলাই, হস্তশিল্প ও ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল উন্নয়ন। স্থানীয় কাঁচামালের ভিত্তিতে এসএমই ক্লাস্টার গঠন।
মূল লক্ষ্য: গ্রাম পর্যায়ে ৫০ হাজার মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা গড়ে তোলা।
চ্যালেঞ্জ: জলবায়ু ঝুঁকি ও মৌসুমি শ্রম অভাব।
নীতি প্রস্তাব: জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্পে গ্রিন স্কিল (Green Jobs) উন্নয়ন, জুট ও মৎস্য শিল্পে দক্ষতা বৃদ্ধি।
মূল লক্ষ্য: ৩ বছরে উপকূলীয় অঞ্চলে ১ লাখ টেকসই গ্রিন চাকরি সৃষ্টি।
চ্যালেঞ্জ: প্রবাসী নির্ভর অর্থনীতি ও পর্যটন খাতের অনুন্নয়ন।
নীতি প্রস্তাব: প্রবাসী কর্মী উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন (Pre-departure Training Centers), ইংরেজি ভাষা ও বিদেশগামী স্কিল প্রশিক্ষণ। ইকো-ট্যুরিজম ও চা শিল্পে স্কিল প্রোগ্রাম।
মূল লক্ষ্য: প্রতিবছর ৫০ হাজার দক্ষ কর্মী বিদেশে প্রেরণ।
চ্যালেঞ্জ: উচ্চশিক্ষা সমাপ্তির পর কর্মসংস্থান সংকট, স্কিল-জব মিসম্যাচ।
নীতি প্রস্তাব:
প্রতিটি উপজেলায় “ডিজিটাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার” স্থাপন।
স্টার্টআপ তহবিল (Seed Fund) চালু করে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি।
বিশেষ উদ্যোগ: জাতীয় যুব কর্মসংস্থান সপ্তাহ চালু করে প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ।
চ্যালেঞ্চ: শ্রম বাজারে নারীদের কম অংশগ্রহণ (প্রায় ৩৬%), কর্মস্থলে বৈষম্য।
নীতি প্রস্তাব:
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নারী সংরক্ষিত কোটা (কমপক্ষে ৫০%)।
কর্মস্থলে ডে-কেয়ার সেন্টার ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা।
বিশেষ উদ্যোগ: নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রোগ্রামে ১০ হাজার ক্ষুদ্র ঋণ মঞ্জুরি।
চ্যালেঞ্চ: কর্মসংস্থানে প্রবেশাধিকারে বাধা, সুযোগের অভাব।
নীতি প্রস্তাব:
প্রতিবন্ধীবান্ধব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
বেসরকারি খাতে প্রতিবন্ধী নিয়োগে করছাড় ও পুরস্কার স্কিম।
বিশেষ উদ্যোগ: প্রতিবন্ধীদের জন্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।
পূর্ণ সমন্বয়: কেন্দ্রীয় পর্যায়ে জাতীয় স্কিল কাউন্সিল এবং স্থানীয় পর্যায়ে জেলা স্কিল কমিটি সক্রিয়করণ।
ইনক্লুসিভ বাজেট: বার্ষিক বাজেটে ১০% স্কিল উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বরাদ্দ বাধ্যতামূলক করা।
কার্যকর পর্যবেক্ষণ: রিয়েল-টাইম মনিটরিং সিস্টেম (National Employment Dashboard) চালু।
গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D): স্কিল ট্রেন্ড বিশ্লেষণের জন্য স্কিল রিসার্চ সেল গঠন।
সময়কাল | মূল কার্যক্রম | উদ্দিষ্ট ফলাফল |
---|---|---|
২০২৫ (প্রথম বছর) | জাতীয় স্কিল কাউন্সিল গঠন, জেলা স্কিল কমিটি চালু, ৩টি পাইলট জেলা বাছাই। | পরিকল্পনা ও কাঠামো প্রস্তুত। |
২০২৬ | প্রতিটি বিভাগে স্কিল ডেভেলপমেন্ট হাব চালু, অন্তত ১০০টি উপজেলায় ট্রেনিং সেন্টার চালু। | ৫ লাখ যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। |
২০২৭ | ইন্ডাস্ট্রি-ভিত্তিক স্কিল সার্টিফিকেশন চালু, প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৫০% উপজেলায়। | দক্ষতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বৃদ্ধি। |
২০২৮ | গ্রিন স্কিল এবং রিনিউএবল এনার্জি স্কিল প্রোগ্রাম সম্প্রসারণ। | ২ লাখ গ্রিন চাকরি সৃষ্টি। |
২০২৯ | মাইক্রো ও স্মল এন্টারপ্রাইজ ফান্ড চালু, ২৫,০০০ স্টার্টআপ সহায়তা। | ১ লাখ নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি। |
২০৩০ (শেষ বছর) | স্কিল ইকোসিস্টেমের মূল্যায়ন, সফল প্রকল্পগুলোর স্থায়ী রূপদান। | টেকসই কর্মসংস্থান ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত। |
মন্ত্রণালয় / সংস্থা | মূল দায়িত্ব |
---|---|
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় | জাতীয় স্কিল কাউন্সিলের নেতৃত্ব, নীতিমালার বাস্তবায়ন তদারকি। |
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর | টিভেট (TVET) উন্নয়ন, স্কুল পর্যায়ে স্কিল শিক্ষা অন্তর্ভুক্তি। |
আইসিটি বিভাগ | আইটি/ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, জেলাভিত্তিক ডিজিটাল স্কিল সেন্টার চালু। |
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় | যুব উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি, যুব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। |
নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় | নারী প্রশিক্ষণ, কর্মস্থলে ডে-কেয়ার ও নিরাপত্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন। |
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় | বিদেশে কর্মী পাঠানোর জন্য স্কিল প্রশিক্ষণ ও ডিপ্লয়মেন্ট। |
স্থানীয় সরকার বিভাগ | উপজেলা ও জেলা স্কিল কমিটির সমন্বয় ও তদারকি। |
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয় | এসএমই ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড পরিচালনা। |
পরিকল্পনা কমিশন ও অর্থ মন্ত্রণালয় | প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন ও উন্নয়ন বাজেট অনুমোদন। |
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় | প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর স্কিল প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ কর্মসূচি বাস্তবায়ন। |
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় | গ্রিন স্কিল প্রশিক্ষণ কর্মসূচি (উদাহরণ: সৌরশক্তি, বন সংরক্ষণ কাজ)। |
“একটি দক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই কর্মসংস্থান ব্যবস্থার জন্য অঞ্চলভিত্তিক বাস্তবায়ন, লক্ষ্যভিত্তিক অগ্রাধিকার, নির্দিষ্ট সময়ে কর্মপরিকল্পনা এবং বিভাগভিত্তিক দায়িত্ব নির্ধারণ অপরিহার্য। এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে বৈশ্বিক স্কিল চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হবে।”
"একটি দক্ষ জনগোষ্ঠীই বাংলাদেশের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মূল ভিত্তি। অঞ্চল ও লক্ষ্যভিত্তিক স্কিল নীতি বাস্তবায়নই আমাদের টেকসই কর্মসংস্থানের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।"
"একটি দক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই শ্রম বাজার গড়ে তোলা, যেখানে ২০২৫ সালের মধ্যে ১ কোটি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ২ কোটিরও বেশি নতুন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে।"
সময়কাল | নতুন কর্মসংস্থান লক্ষ্য | মোট কর্মসংস্থান সংখ্যা |
---|---|---|
২০২৫ (১ বছরের মধ্যে) | ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) | ১০ মিলিয়ন |
২০২6–২০৩০ (পরবর্তী ৫ বছরে) | ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) | মোট ৩০ মিলিয়ন (৩ কোটি) |
খাত | ২০২৫ লক্ষ্যমাত্রা | ২০২৬–২০৩০ লক্ষ্যমাত্রা | মোট |
---|---|---|---|
কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প | ২ মিলিয়ন | ৩ মিলিয়ন | ৫ মিলিয়ন |
নির্মাণ ও অবকাঠামো | ৩.৫ মিলিয়ন | ৪.৫ মিলিয়ন | ৮ মিলিয়ন |
আইটি ও ফ্রিল্যান্সিং | ১.৫ মিলিয়ন | ৩.৫ মিলিয়ন | ৫ মিলিয়ন |
উৎপাদন ও এসএমই (SME) | ২ মিলিয়ন | ৫ মিলিয়ন | ৭ মিলিয়ন |
সেবা ও পর্যটন | ১ মিলিয়ন | ২ মিলিয়ন | ৩ মিলিয়ন |
বৈদেশিক কর্মসংস্থান | — | ২ মিলিয়ন | ২ মিলিয়ন |
অন্যান্য (সবুজ জবস, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ইত্যাদি) | — | ১ মিলিয়ন | ১ মিলিয়ন |
জাতীয় কর্মসংস্থান টাস্কফোর্স গঠন।
সেক্টরভিত্তিক জরুরি পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) সক্রিয়করণ।
বৃহৎ পরিসরে স্কিল ট্রেনিং এবং আইটি প্রশিক্ষণ।
প্রতিটি জেলায় জেলা কর্মসংস্থান কেন্দ্র চালু।
✅ ১ বছরে ১০ মিলিয়ন লোকের চাকুরি/আয়ের সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (SEZ) দ্রুত সম্প্রসারণ ও শিল্প স্থাপন।
নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতের চাকুরি সৃষ্টি (এআই, ব্লকচেইন, রোবোটিক্স)।
গ্রিন ইকোনমি (Green Economy) ও নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে চাকুরির উন্নয়ন।
নারী, প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান।
বিদেশগামী দক্ষ কর্মী প্রস্তুতি কেন্দ্র স্থাপন।
✅ ৫ বছরে অতিরিক্ত ২০ মিলিয়ন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে।
সময়কাল | কার্যক্রম | নেতৃত্ব |
---|---|---|
মাসিক | কর্মসংস্থান ড্যাশবোর্ড আপডেট | জাতীয় স্কিল কাউন্সিল |
ত্রৈমাসিক | অগ্রগতি মূল্যায়ন সভা | প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় |
ষান্মাসিক | মধ্যবর্তী মূল্যায়ন | অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ERD) |
বার্ষিক | পূর্ণাঙ্গ অডিট ও প্রতিবেদন প্রকাশ | মহাহিসাব নিরীক্ষক (CAG) |
খাত | বাজেট (প্রতি বছর) | উৎস |
---|---|---|
পাবলিক ওয়ার্কস ও অবকাঠামো | $২ বিলিয়ন | সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী |
স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও প্রশিক্ষণ | $১ বিলিয়ন | সরকার ও বেসরকারি খাত |
SME সহায়তা ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন | $১ বিলিয়ন | ব্যাংক ও ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠান |
আইটি ও ডিজিটাল খাত উন্নয়ন | $০.৫ বিলিয়ন | ICT Division, ডেভেলপার কোম্পানি |
ইনক্লুসিভ ও গ্রিন জবস প্রোগ্রাম | $০.৫ বিলিয়ন | পরিবেশ মন্ত্রণালয়, ডোনার সংস্থা |
মোট বার্ষিক প্রয়োজনীয়তা: প্রায় $৫ বিলিয়ন (প্রতি বছর)
৫ বছরে আনুমানিক বাজেট: $২৫–২৭ বিলিয়ন
"বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কর্মসংস্থান অভিযান শুরু হতে চলেছে।
১০ মিলিয়ন লোককে ১ বছরের মধ্যে আয়ের আওতায় এনে এবং পরবর্তী ৫ বছরে আরও ২০ মিলিয়ন কর্মসংস্থান তৈরি করে বাংলাদেশ তার যুব সমাজকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে শক্তিশালী ও টেকসই করবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে হবে আগামীর স্বনির্ভর বাংলাদেশ।ড. রাজু আহমেদ দিপু
Dr. Raju Ahmed Dipu Politician, Analyst, Social Entrepreneur
স্টার্টআপ মাইক্রোলোান প্রোগ্রাম সুদবিহীন, মাসিক ১০০% লাভভিত্তিক মডেল- ড. রাজু আহমেদ দিপু
বাংলাদেশ জাতীয় কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধার উদ্যোগ (NERI) (প্রত্যেক জেলা, থানা ও ইউনিয়নভিত্তিক জব সেন্টার মডেল) প্রণেতা: ড. রাজু আহমেদ দিপু
Bangladesh Unemployment Strategic Research & Solutions for Future Generations (2025) (Prepared by Dr. Raju Ahmed Dipu | For BangladeshUnemployment.com)